Jagadhatri Puja Mantra (জগদ্ধাত্রী পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র) in Bengali
২০২৫ সালের জগদ্ধাত্রী পূজার তারিখ ও সময়
- পূজা দিবস: ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ (শুক্রবার)
- নবমী তিথি শুরু: ৩০ অক্টোবর, ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) দুপুর ০২:৪৯ মিনিটে।
- নবমী তিথি শেষ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ (শুক্রবার) বিকেল ০৪:৪৩ মিনিটে।
-
পূজার মুহুর্ত:
- সপ্তমী পূজা: ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
- অষ্টমী পূজা: ২৯ অক্টোবর, ২০২৫
- নবমী পূজা: ৩০ অক্টোবর, ২০২৫
✨ জগদ্ধাত্রী পূজার আর বাকি...
Jagadhatri Puja is a significant festival celebrated with great devotion, especially in West Bengal. Goddess Jagadhatri is another form of Devi Durga. Here you will find the Jagadhatri Puja Pushpanjali Mantra, Pranam Mantra, and Dhyan Mantra in Bengali.
জগদ্ধাত্রী পূজা পশ্চিমবঙ্গের, বিশেষত চন্দননগর এবং কৃষ্ণনগরে, অত্যন্ত ধুমধাম করে উদযাপিত হয়। দেবী জগদ্ধাত্রী হলেন দেবী দুর্গারই আর এক রূপ, যিনি জগতের ধাত্রী বা ধারণকর্ত্রী। এই পূজার বিশেষ মন্ত্রগুলি নিচে ভক্তিভরে পাঠ করার জন্য দেওয়া হলো।
Jagadhatri Puja Mantra in Bengali
[পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র]
ওঁ দয়ারূপে দয়াদৃষ্টে দয়াদ্রে দুঃখ-মোচনী।
সর্ব্বাপত্তারিকে দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে।।
দুং এষ সচন্দন পত্র পুষ্পাঞ্জলিঃ
সাঙ্গায়ৈ স্বাভরণায়ৈ স্বায়ুধায়ৈ
সবাহনায়ৈ সপরিবারায়ৈ
শ্রী নীলকন্ঠ ভৈরব সহিতায়ৈ
শ্রী জগদ্ধাত্রী দুর্গায়ৈ দেবতায়ৈ বৌষট্।।
ব্যাখ্যা: এই মন্ত্রে দেবীকে "দয়ারূপে" (করুণার মূর্ত প্রতীক) এবং "দুঃখ-মোচনী" (দুঃখ হরণকারিনী) বলে সম্বোধন করা হয়েছে। ভক্ত দেবীর কাছে প্রার্থনা করছেন, যিনি সমস্ত বিপদ থেকে উদ্ধার করেন ('সর্ব্বাপত্তারিকে দুর্গে')। এরপর ভক্ত চন্দন, পত্র ও পুষ্পাঞ্জলি দেবীর সমস্ত পরিবার, অলঙ্কার, অস্ত্র ও বাহন সহ শ্রী নীলকণ্ঠ ভৈরব সহ দেবী জগদ্ধাত্রী দুর্গাকে অর্পণ করছেন।
প্রতীকী অর্থ: পুষ্পাঞ্জলি হল ভক্তের ভক্তি ও অহংকারের সমর্পণ। ফুলের মতো নির্মল মন নিয়ে ভক্ত দেবীর চরণে নিজেকে নিবেদন করেন। এই মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে ভক্ত জাগতিক দুঃখ ও বিপদ থেকে মুক্তির জন্য দেবীর অপার করুণা প্রার্থনা করেন।
[প্রণাম মন্ত্র]
ওঁ জয়দে জগদানন্দে জগদেক প্রপূজিতে।
জয় সর্ব্বগতে দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে।।
ওঁ সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থসাধিকে।
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরি নারায়নী নমোহস্তুতে।।
ওঁ প্রণতানাং প্রসীদ ত্বং দেবি বিশ্বার্তি হারিণি।
ত্রৈলোক্যবাসিনামীড্যে লোকানাং বরদা ভব।।
ব্যাখ্যা: এটি একটি সম্মিলিত প্রণাম মন্ত্র। প্রথম অংশে দেবীকে জগতের আনন্দদায়িনী (`জগদানন্দে`) ও সকলের দ্বারা পূজিতা (`জগদেক প্রপূজিতে`) রূপে প্রণাম করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশটি বিখ্যাত দেবী স্তুতি, যেখানে তাঁকে সমস্ত মঙ্গলের উৎস (`সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে`), সকল অর্থসাধিকা (`সর্বার্থসাধিকে`) এবং শরণাগতকে রক্ষাকারিণী (`শরণ্যে`) রূপে বন্দনা করা হয়। তৃতীয় অংশে ভক্ত প্রার্থনা করেন যে দেবী যেন তাঁর প্রতি প্রসন্ন হন এবং ত্রিভুবনের দুঃখ হরণ করে সকলকে বরদান করেন।
প্রতীকী অর্থ: প্রণাম মন্ত্র হল বিনয় ও শ্রদ্ধার প্রতীক। ভক্ত দেবীর বিভিন্ন রূপ ও গুণের (যেমন - দুর্গা, গৌরী, নারায়ণী) কাছে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করেন। এই মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে ভক্ত দেবীর সর্বব্যাপী রূপকে স্বীকার করে নেন এবং তাঁর আশ্রয়ে থেকে সমস্ত শুভ ফল ও সুরক্ষা কামনা করেন।
[ধ্যান মন্ত্র]
ওঁ দুং সিংহস্কন্ধ-সমারূঢ়াং নানালঙ্কার-ভূষিতাম।
চতুর্ভুজাং মহাদেবীং নাগ-যজ্ঞোপবীতিনীম।।
শঙ্খ-শার্ঙ্গ-সমাযুক্ত-বাম-পাণিদ্বয়াম্ তথা।
চক্র-বাণ সমাযুক্ত দক্ষ পাণিদ্বয়াম্ তথা।।
রক্তবস্ত্রপরীধানাং বালার্ক সদৃশ দ্যুতিম।
নারদাদ্যৈর্মুনিগণৈঃ সেবিতাং ভবসুন্দরীম।।
ত্রিবলীবলয়ো পীত-নাভিনাল-মৃণালিনীং।
ইষৎসহাস্যবদনাং কাঞ্চনাভাং বরপ্রদাং।।
নবযৌবনসম্পন্নাং পীনোন্নতপয়োধরাম্।
করুণামৃতবর্ষিণ্যা পশ্যন্তীং সাধকং দৃশা।।
রত্নদ্বীপে মহাদ্বীপে-সিংহাসন-সমন্বিতে।
প্রফুল্ল-কমলারূঢ়াং ধ্যায়েত্তাং ভবগেহিনীম্।।
ব্যাখ্যা: এটি দেবীর রূপ বর্ণনার ধ্যান মন্ত্র। এখানে দেবীকে সিংহের কাঁধে আসীন, চতুর্ভুজা, সর্পের উপবীত (পৈতা) পরিহিতা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তাঁর দুই বাম হস্তে শঙ্খ ও ধনুক এবং দুই দক্ষিণ হস্তে চক্র ও বাণ। তিনি রক্তবস্ত্র পরিহিতা, তাঁর দ্যুতি নবোদিত সূর্যের ন্যায়। নারদাদি মুনিগণ তাঁর সেবা করছেন। তিনি ঈষৎ হাস্যময়ী, স্বর্ণবর্ণা এবং বরদাত্রী। তিনি নবযৌবনসম্পন্না এবং করুণারূপ অমৃত বর্ষণকারী দৃষ্টিতে ভক্তের দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি রত্নদ্বীপে প্রস্ফুটিত কমলের উপর আসীন।
প্রতীকী অর্থ: প্রতিটি বর্ণনাই গভীর তাৎপর্যপূর্ণ। সিংহ হল দমিত অহংকার ও শক্তির প্রতীক। চতুর্ভুজ চার দিকের উপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ বোঝায়। শঙ্খ (শব্দ), চক্র (কাল), ধনুক (সংকল্প) ও বাণ (লক্ষ্য) - এই অস্ত্রগুলি সৃষ্টির শৃঙ্খলা রক্ষার প্রতীক। সর্প কুণ্ডলিনী শক্তি বা কালকে নিয়ন্ত্রণের প্রতীক। প্রস্ফুটিত কমল পবিত্রতা ও নির্লিপ্ততার প্রতীক – তিনি জগতে থেকেও জগতের ঊর্ধ্বে। দেবীর করুণাময় দৃষ্টি ভক্তের জন্য সবচেয়ে বড় আশ্বাস, যা সমস্ত সাধনার ফল।