Kon Deshete Tarulata Poem By Satyendranath Dutta
Poem: Kon Deshe
Writer: Satyendranath Dutta
Kon Deshe Poem was written by renowned poet Satyendranath Dutta. Kon Deshe Poem. Kon Deshete Tarulata Poem. Kon Deshe Full Bengali Poem.
কোন দেশেতে তরুলতা কবিতাটি লিখেছিলেন ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। কোন দেশেতে তরুলতা কবিতা।
Kon Deshe Poem in Bengali Font:
কোন দেশেতে তরুলতা—
সকল দেশের চাইতে শ্যামল ?
কোন দেশেতে চ'ল্তে গেলেই—
দ'লতে হয় রে দুৰ্ব্বা কোমল ?
কোথায় ফলে সোনার ফসল,—
সোনার কমল ফোটে রে?
সে আমাদের বাংলা দেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!
কোথায় ডাকে দোয়েল শ্যামা-
ফিঙে গাছে গাছে নাচে ?
কোথায় জলে মরাল চলে—
মরালী তার পাছে পাছে ?
বাবুই কোথা বাসা বোনে—
চাতক বারি যাচে রে?
সে আমাদের বাংলা দেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!
কোন ভাষা মরমে পশি’—
আকুল করি তোলে প্রাণ ?
কোথায় গেলে শুনতে পাব --
বাউল স্বরে মধুর গান ?
চণ্ডীদাসের—রামপ্রসাদের—
কণ্ঠ কোথায় বাজে রে ?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরি বাংলা রে!
কোন দেশের দুর্দ্দশায় মোরা —
সবার অধিক পাই রে দুখ ?
কোন দেশের গৌরবের কথায়—
বেড়ে উঠে মোদের বুক ?
মোদের পিতৃপিতামহের—
চরণ ধূলি কোথা রে?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরি বাংলা রে।।
Kon Deshete Tarulata Poem Explanation in Bengali:
কোন দেশেতে তরুলতা কবিতার ব্যাখ্যা:
এই কবিতাটি বাংলার বিখ্যাত "ছন্দের জাদুকর" কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১৮৮২-১৯২২) রচিত একটি দেশপ্রেমের কবিতা। তাঁর "সবিতা" (১৯০০) কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত এই কবিতাটি বাংলাদেশের মাটি, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্যের প্রশংসায় রচিত।
কবিতার মূল বিষয়বস্তু:
কবিতাটি মূলত বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য, ভাষাগত মাধুর্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি চিত্রকল্প। কবি প্রশ্নোত্তর পদ্ধতিতে বাংলার বিভিন্ন দিকের তুলনারহিত গুণাবলীর উল্লেখ করেছেন।
নীচে প্রতিটি স্তবকের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
প্রথম স্তবক
কবি প্রশ্ন করেন, কোন দেশে গাছপালা ও লতাগুল্ম সবচেয়ে সবুজ ("শ্যামল") এবং হাঁটার সময় নরম দূর্বাঘাসে ("দুৰ্ব্বা কোমল") পা ডুবে যায়? কোথায় সোনার মতো ফসল ("সোনার ফসল") ও সোনার কমল ফোটে? উত্তর হলো—আমাদের বাংলাদেশ। এই স্তবকে বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও উর্বরতার প্রশংসা করা হয়েছে, যা কবির হৃদয়ে গর্ব জাগায়।
দ্বিতীয় স্তবক
এখানে কবি বাংলার প্রাণীকুল ও নদী-জলাশয়ের সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন। কোথায় দোয়েল ও শ্যামা পাখি ডাকে, ফিঙে গাছে নাচে, মরাল হাঁস জলে চলে, বাবুই পাখি বাসা বোনে, আর চাতক পাখি বৃষ্টির জন্য ডাকে? উত্তর আবারো—আমাদের বাংলাদেশ। এই স্তবক বাংলার জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।
তৃতীয় স্তবক
কবি এবার বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি মনোযোগ দেন। কোন ভাষা হৃদয়ে প্রবেশ করে মনকে আকুল করে? কোথায় বাউলের মধুর গান, চণ্ডীদাস ও রামপ্রসাদের কণ্ঠ শোনা যায়? উত্তর—আমাদের বাংলাদেশ। এই স্তবকে বাংলার সাহিত্য, সঙ্গীত, ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রশংসা করা হয়েছে, যা বাঙালির পরিচয়ের অংশ।
চতুর্থ স্তবক
শেষ স্তবকে কবি বাংলার দুঃখ ও গৌরব উভয়ের কথা বলেন। কোন দেশের দুর্দশায় আমরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাই? কোন দেশের গৌরবের কথায় আমাদের বুক গর্বে ভরে ওঠে? আমাদের পূর্বপুরুষদের চরণধূলি কোথায়? উত্তর—আমাদের বাংলাদেশ। এই স্তবক বাংলার সুখ-দুঃখ, ইতিহাস, ও ঐতিহ্যের সঙ্গে বাঙালির গভীর আত্মিক সংযোগ তুলে ধরে।
সারাংশ:
কবিতাটি বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, এবং ঐতিহাসিক গৌরবের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও গর্ব প্রকাশ করে। একইসঙ্গে, এটি বাংলার দুঃখ-দুর্দশার প্রতি সংবেদনশীলতাও দেখায়, যা বাঙালির পরিচয়ের অবিচ্ছেদ্য অংশ।