Ek Opremiker Jonno Kobita

    Ek Opremiker Jonyo Poem By Taslima Nasrin

    Poem: Ek Opremiker Jonno
    Writer: Taslima Nasrin
    Recitation: Munmun Mukherjee

    Ek Opremiker Jonno Kobita has been written by Taslima Nasrin. This poem is recitated by Munmun Mukherjee. Ek Opremiker Jonyo Poem. Ek Opremiker Jonyo Lyrics. Ek Opremiker Jonyo Poem By Taslima Nasrin. Ek Opremiker Jonno Kobita By Taslima Nasrin. Ek Opremiker Jonno Kobita.

    এক অপ্রেমিকের জন্য কবিতাটি হল তসলিমা নাসরিন এর লেখা। কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন মুনমুন মুখার্জী। এক অপ্রেমিকের জন্য কবিতা।

    Ek Opremiker Jonno Kobita in Bengali:


    এই শহরে তুমি বাস করবে
    কাজে অকাজে দৌড়বে এদিক ওদিক
    কোথাও আড্ডা দেবে অবসরে
    মদ খাবে, তুমুল হইচই করবে
    রাত ঘুমিয়ে যাবে, তুমি ঘুমোবে না।

    ফাঁক পেলে কোন কোন সন্ধ্যেয়,
    এ বাড়ি ও বাড়ি খেতে যাবে, খেলতে যাবে।
    কে জানে হয়তো খুলতেই যাবে আলগোছে কারোর শাড়ি;
    আমার আঙিনা পেরিয়েই কোন বাড়িতে হয়তো।

    এ পাড়াতেই হয়তো দুবেলা হাঁটাহাঁটি করবে,
    হাতের নাগালেই থাকবে ।
    হয়তো কখনও জানিয়েই দেবে আমাকে
    যে, কাছেই আছো
    কুঁকড়ে যেতে থাকবো, কুচি কুচি করে নিজেকে কাটতে থাকব
    দেখা না হওয়ার যন্ত্রণায়, তবু বলবো না এসো।
    বলবো না, তোমাকে সুযোগ দেব না বলার,
    যে তোমার সময় নেই, বা ভীষণ ব্যস্ত তুমি ইদানীং।
    তোমার অপ্রেম থেকে নিজেকে বাঁচাবো আমি।
    তোমার সঙ্গে আমার দেখা হবে না।

    বছর পেরোবে, তোমার সঙ্গে দেখা হবে না আমার
    দেখা না হতে না হতে ভুলতে থাকবো,
    তোমার সঙ্গে দেখা হওয়াটা ঠিক কেমন ছিল।
    কী রঙের শার্ট পরতে তুমি?
    হাসলে তোমাকে ঠিক কেমন দেখাতো
    কথা বলার সময় নখ খুঁটতে
    চোখের দিকে নাকি অন্য কোথাও তাকাতে
    পা নাড়তে, ঘনঘন চেয়ার ছেড়ে উঠতে
    জল খেতে কিনা, ভুলতে থাকবো

    অনেকগুলো বছর পেরিয়ে যাবে,
    তোমার সঙ্গে আমার আর দেখা হবে না।
    এক শহরেই, অথচ দেখা হবে না।
    পথ ভুলেও কেউ কারও পথের দিকে হাঁটবো না
    আমাদের অসুখ বিসুখ হবে, দেখা হবে না।
    কোনও রাস্তার মোড়ে, কিংবা পেট্রোল পাম্পে
    কিংবা মাছের দোকানে, বইমেলায়, রেস্তোরাঁয়,
    কোথাও দেখা হবে না।

    আরও অনেকগুলো বছর পর, ভেবে রেখেছি
    যেদিন হুড়মুড় করে একঝাঁক আলো নিয়ে
    সন্ধ্যে ঢুকতে থাকবে আমার নির্জন ঘরে,
    যেদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমার আঁচল উড়িয়ে
    নিতে থাকবে বুনো বৈশাখী,
    এক আকাশ চাঁদের সঙ্গে কথা বলবো যে রাতে সারারাত --
    তোমাকে মনে মনে বলবোই সেদিন
    কী এমন হয় দেখা না হলে?
    দেখা না হলে মনে হতো বুঝি বেঁচে থাকা যায় না।
    কে বলেছে যায় না, দেখ, দিব্যি যায়!

    তোমার সঙ্গে দেখা হয়নি কয়েক হাজার বছর,
    তাই বলে কি আর বেঁচে ছিলাম না?
    দিব্যি ছিলাম!
    ভেবেছি বলবো,
    তুমি তো আসলে একটা কিছুই-না ধরনের কিছু
    আমার আকাঙ্খা দিয়ে এঁকেছিলাম তোমাকে
    আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে প্রেমিক করেছিলাম
    আমার আকাংখা দিয়ে তোমাকে অপ্রেমিকও করেছি
    তোমাকে না দেখে লক্ষ বছরও বেঁচে থাকতে পারি!
    অপ্রেমিককে না ছুঁয়ে, অনন্তকাল।
    একফোঁটা চোখের জল বর্ষার জলের মতো ঝরে
    ধুয়ে দিতে পারে এতকালের আঁকা সবগুলো ছবি,
    তোমার নাম ধাম দ্রুত মুছে দিতে পারে চোখের জল।
    তোমাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে।

    আমাকে একা বলে ভেবোনা কখনো,
    তোমার অপ্রেম আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকে।।