Poem: Onyo Valentine Writer: Aveek Ray Recitation: Munmun Mukherjee
Onyo Valentine Poem has been written by Aveek Ray. This poem is recited by Munmun Mukherjee. Onyo Valentine Poem Munmun Mukherjee. Onyo Valentine Kobita. Onyo Valentine Bengali Kobita. Onno Valentine Poem. Onyo Vallentine Poem.
অন্য ভ্যালেনটাইন কবিতাটি লিখেছেন অভীক রে। কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন মুনমুন মুখার্জী। অন্য ভ্যালেনটাইন কবিতা।
Onyo Valentine Poem in Bengali:
৭ই ফেব্রুয়ারি
আজ দেখা করতে যাওয়ার পথে
ওর জন্য দশটা লাল গোলাপ কিনলাম,
টালিগঞ্জ মেট্রোর সামনে থেকে।
দাম শুনে তো আমার রেটিনায় সর্ষে ফুল।
অন্যান্য দিন যে গোলাপগুলো মাত্র পাঁচ টাকা করে নেয়,
আজ সেগুলোই ত্রিশ টাকা!!
এই নিয়ে দশ বছর হল আমাদের সম্পর্কের।
মহারাণীর আবদার,
বছরের সঙ্গে সঙ্গে গোলাপের সংখ্যা বাড়াতে হবে।
তার মানে এই পরের বছর এগারোটা।
আর আজ থেকে চল্লিশ বছর বাদে পঞ্চাশটা।
এটা আবদার?! না গভার্নমেন্ট নোটিশ
মাঝেমধ্যেই গুলিয়ে যায় আমার।
৮ই ফেব্রুয়ারি
আজ এই নিয়ে প্রায় তিন হাজার সাতশো ঊনত্রিশ বার
প্রোপোজ করতে হল ওকে।
এই প্রোপোজ ডে-ফে তো একটা অজুহাত মাত্র।
প্রথম প্রথম মহিলা ভালোভাবেই প্রত্যুত্তর দিতেন।
তারপরে একটা নতুন কায়দা শিখলেন।
প্রায় ঘার ধরে প্রোপোজ করিয়ে নেওয়ার পর,
চুপ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতেন।
আমি যখন বলতাম, কী রে উত্তর দিলিনা যে?
অনেকক্ষন চুপ করে থাকার পর, মুচকি হেসে বলতেন,
ভেবে দেখব।
আর আজ তো কিছুই বললেন না!!
খানিকক্ষণ চুপ করে থাকার পর
একটা মৃদু হাসির শব্দ পেলাম মনে হল।
বুঝলাম, ওটাই ওর উত্তর।
৯ই ফেব্রুয়ারি
চকলেট নিয়ে হ্যাংলামোর একটা লিমিট থাকে
একবার অটোয় করে যেতে যেতে,
একটা বাচ্চা ছেলের ক্যাডবেরিতে
টুক করেই ভাগ বসিয়ে দিয়েছিলেন ভদ্রমহিলা।
ব্যাস, তারপর কী কান্ড!
লোকের খিদে পায়, কবিতা পায়
ওনার চকোলেট পায়!!
তবে মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে,
কখনোই নিজের টাকায় কিনে খান না।
আজ ওর জন্য একটা ইয়া বড় চকলেট
কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম,
রাস্তার অন্য পারের ফুটপাতে,
একটা ছেলে তার প্রেমিকার জন্য
একটা আমার মতোই ইয়া বড় চকোলেট কিনে নিয়েছে।
দেখে মনে হল, তার মানে আমি একা নই।
১০ই ফেব্রুয়ারি
আজ শরীরটা খারাপ থাকায়
আর দেখা করতে যেতে পারিনি।
এরকমটাই মহিলাকে জানিয়েছি।
আসলে গোলাপ আর চকোলেট তাও ঠিক আছে।
কিন্তু এই বয়সে একটা বুড়ো লোক,
বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে
গোলাপি আর হলুদ টেডি গুলোর মাঝে,
কোনটা বেশি নরম...সেটা দেখার জন্য বাছাবাছি করছে।
এটা কি মানা যায় বলুনতো?!
তাই এই টেডি ব্যাপারটা অনলাইনে কিনে
ওর ঠিকানায় ক্যুরিয়ার করে দিই।
প্রথম বছর মহারাণী একটু রাগারাগি করেছিলেন,
কিন্তু তারপর পরের দুবছর মানে এই শেষ দুবছর
আমার অসুবিধাটা মহারাণী বুঝতে পেরেছেন।
কিছু বলেননি।
১১ই ফেব্রুয়ারি
তুমি দিনে পাঁচটার বেশি সিগারেট খাবে না, প্রোমিস?
আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ের ছবিতে লাভ রিয়াক্ট দেবে না, প্রোমিস?
আই লাইক ইওর সল্ট অ্যান্ড পেপার (pepper) লুক।
সো ইউ আর নট গোয়িং টু ডাই ইওর হেয়ার, প্রমিস?
এই ছিল মহিলার গত তিন বছরে প্রোমিস করানোর নমুনা।
এই যৎসামান্য প্রোমিসিং এজেন্ডা নিয়ে
যে মানুষটা গত তিন বছর ধরে দিনের পর দিন
আমাকে সহ্য করেছে, তাকে ভালো না বেসে থাকা যায়, বলুন?
তাই আজ আমি আগেভাগেই বলে দিলাম, প্রোমিস
তুই যা বলবি, আমি তাই করবো।
শুনে মহিলা এতটাই হতভম্ব হয়ে গেলেন,
যে ঠোঁট থেকে আর কোন কথায় বেরোলো না।
১২ই ফেব্রুয়ারি
আজ একটা সিক্যুরিটি গার্ড আমাদের দেখে
কিছুক্ষণের জন্য থমকে গেছিল।
মহিলার বরাবরের অভিযোগ আমার উচ্চতা নিয়ে।
আমি যখন ওর পাশে হাঁটি,
তখন নাকি আমাকে ওর জেঠু বলে মনে হয়।
আমাকে জড়িয়ে ধরলে নাকি ওর মনে হয়
উনি পাহাড়ে ওঠা প্র্যাক্টিস করছেন।
আজ ভদ্রমহিলাকে জড়িয়ে ধরতে হল
একটা বিশেষ কায়দায়।
অবশ্য আর কোন উপায়ও ছিল না।
ঠিক সেইসময় ওই সিক্যুরিটি গার্ড ভদ্রলোক এসে হাজির।
উফ্, আর সময় পেল না আসার!!
১৩ই ফেব্রুয়ারি
এই ব্যাপারটা না ভীষণ ব্যক্তিগত।
তবু আজ পর্যন্ত যতবার ভদ্রমহিলাকে চুমু খেয়েছি,
মনে হয়েছে বুকের ভেতর কেউ দামামা বাজিয়েছে।
আজও তার অন্যথা হল না।
শুধুমাত্র সিকিউরিটিটা এসবের মাঝখানে এসে পড়ে
আরও একবার আমাদের দেখে, অবাক চোখে তাকিয়ে রইল।
কাউকে বোধহয় আগে এভাবে চুমু খেতে দেখেনি।
কী করবো?
মহিলা যে মাটির নিচে কফিনের মধ্যে দিব্যি শুয়ে আছেন।
চুমু খেতে গেলে আমাকে তো ঠোঁটটা মাটিতে ঠেকাতেই হবে।
১৪ই ফেব্রুয়ারি
গতকাল জড়িয়ে ধরার পর, মাটি থেকে উঠে দেখি
সমস্ত জামায় ধুলো লেগে আছে।
এই সিকিউরিটি গার্ড ভদ্রলোক নির্ঘাত আমাকে
পাগল ঠাহরেছেন।
অনেক লোকের মুখে শুনেছি
যার কেউ নেই তার ঈশ্বর আছেন।
তবে আমি মনে করি যার কেউ নেই,
তার অপেক্ষা আছে।
আর এই অপেক্ষায় পারে
সারা জীবনের মতো আলাদা হয়ে যাওয়া দুটো মানুষকে
এক আকাশের তলায় সামনাসামনি দাঁড় করিয়ে দিতে।
গত আটমাস ধরে তুমি আমার পাশে নেই
কিন্তু আমার থেকে অনেক দূরে,
মাটির নিচে যে তুমিটা চুপ করে শুয়ে আছ;
আমি জানি সে অপেক্ষা করছিল এই সাতটা দিনের।
এই সাতটা দিন কারোর চোখে লোক দেখানো
কারোর চোখে আদেখলাপনা
কারোর চোখে কলোনিয়াল হ্যাংওভার।
আমিও মাঝে মাঝে বিরক্ত হতাম এই সাতটা দিন আসলে।
কিন্তু আজ, তুমি যখন আমার পাশে নেই
তখন বুঝতে পারলাম এই সাতটা দিনের মাহাত্ম্য।
এই যে বছরের নির্দিষ্ট পাঁচটা দিনেই ধুমধাম করে দুর্গাপূজা হয়
এই যে বছরের নির্দিষ্ট একটা দিনেই ঈদ পালন করে মানুষ
এই যে বছরের নির্দিষ্ট একটা দিনেই সমস্ত শহর ঝলমল করে ওঠে ক্রিসমাস পালন করার জন্য।
এগুলো তো বছরের যেকোনো দিন হতে পারতো,
কেন হয়না?
কারণ তাহলে অপেক্ষা নামক শব্দটাই চিরতরে মুছে যাবে
উৎসবের অভিধান থেকে।
আমরা যারা ভালোবাসাকে একটা ধর্ম হিসাবে মেনে নিয়েছি,
তাদের কাছে এই সাতদিন একটা ধর্মীয় উৎসব।
ছোটবেলা থেকে আমি কোনদিন ডায়েরি লিখিনি।
গত ৭ই ফেব্রুয়ারি রাতে প্রথম লিখতে বসেছিলাম।
তাই গত ছয় দিন যা যা লিখেছি, সেগুলো পড়ে হাসি পেলেও
সেটা সম্বরণ করার চেষ্টা করুন।
আজ এই পাতাটা এখানে বসে লিখছি কারণ
কারণ তোমার ইচ্ছা ছিল আমার প্রেমপত্র লিখতে দেখার।
এই লেখাটা শেষ হওয়ার পর ডায়েরির সাতটা পাতা
আমি রেখে যাব এখানে।
সাথে নিয়ে যাব এমন একটা ডায়েরি
যাতে চাইলেও এই সাতদিনে কোন দাগ কাটতে পারবে না।
আবার এইভাবেই পরের বছর এইদিনে
একটা ডায়েরি হাতে নিয়ে বসবো তোমার সামনে।
যাওয়ার সময় রেখে যাব আরও সাতটা পাতা।
ততদিন অপেক্ষা করো কেমন।
বাই দ্য ওয়ে, সিকিউরিটি গার্ড ভদ্রলোকের সাথে
আজ ঢোকার মুখে দেখা হল।
কাল ওইভাবে কফিনে ঠোঁট ঠেকিয়ে রাখার কারণটা জানার পর,